(কেউ কেউ আমায় প্রশ্ন করে কেন আমি মেরিন ফিশারিজ একাডেমীতে জয়েন করেছিলাম। এটি কি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল? তার উত্তর দিলাম এখানে)
১৯৯৩-৯৪ সন। একদিন মনির খোজ নিয়ে এল মেরিন ফিশারিজ নামে নাকি চট্টগ্রামে একটি একাডেমী আছে যা মেরিন একাডেমীর মতো। আবদুল্লাহ জানান দিল "ঠিক ঠিক, ওখানে আমার খালাতো ভাই শামিম ভাই আছেন" দল ভারী হল মোহাম্মদের উৎসাহে। দুই জন স্ট্যান্ড করা ছেলে যেখানে পরীক্ষা দিবে সেখানে আমি তো নস্যি। ঠিক হল মেরিন একাডেমী ও মেরিন ফিশারিজ একাডেমী দুটোতেই পরিক্ষা দিব আমরা চারজন ক্যাডেট কলেজের ছাত্র। মেরিন একাডেমীতে চান্স পেয়ে মোহাম্মদ ভেসে গেল। আবদুল্লাহ মালয়েশিয়ায় স্কলারশীপ নিয়ে উড়ে গেল। দুই স্ট্যান্ডধারী আউট হয়ে গেলে মনির আর আমি থাকলাম। পরিক্ষার দিন দেখি মনির নাই। ও নাকি শামিম ভাইয়ের (নুরুজ্জামান স্যার ১৬ তম ব্যাচ) সাথে পত্রালাপ করে অফ গেছে। রইল বাকি এক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে প্রায় এক বছর পড়ালেখা করার এক পর্যায়ে যখন বন্ধু মারুফ বলল এতদিন পড়ালেখা করে আর চাকরি পাবিনা, সেশন জট, রাজনীতি এইসব থেকে দ্রুত ক্যারিয়ার গড়তে ওইখানে চলে যা ; আইনের অনেক বন্ধুও উৎসাহ দিল। শেষে যখন বন্ধু মাসুদ বলল তুই বিচারক হলে আসামী সব ছাড়া পেয়ে যাবে আর নির্দোষের হবে ফাঁসি। আমি বাবার উৎসাহে আর ছোট মামার সোহাগ এসি বাসের টিকেট পেয়ে ভাবলাম দেখিনা কি হয়। কিন্তু মানুষ ভাবে এক হয় আরেক। এক নাগারে পর পর সব পরিক্ষায় যখন উত্তীর্ণ হয়ে গেলাম, বাবা বললেন তোর মর্জি। আমি সব বিবেচনায় ভাবলাম দেখিনা কি হয়। কিন্তু ওয়ান ওয়ে টিকেটের শেষে দেখি ধু ধু মরুভূমি। কিন্তু এসব ছাড়িয়ে পেয়েছিলাম চমৎকার সব শিক্ষক, সিনিয়র-জুনিয়র আর উদার ও আন্তরিক সব ব্যাচমেট। এদের কেমন করে ভুলি? আমি তাই ভাবি ভুল হয়নি কোথাও। এটি হল এক ধরনের টাইম লাইন। জীবনকে সাজানোর উপাত্ত। ভালবাসার অন্য এক প্ল্যাটফরম।